প্রত্যেকটি মানুষই ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে নিজের ক্যারিয়ারকে খুব ভালো একটি স্থানে নিয়ে যেতে। কারো কারো আকাশছোঁয়া স্বপ্ন থাকে। অনেকেই চাই বড় হয়েছে বিমানচালনা করবে। আকাশের বুকে উড়ে বেড়াবে।কিন্তু সঠিক নির্দেশ নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে তাদের আর এই ইচ্ছা সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে না। হ্যাঁ আমি বলছি পাইলট হওয়ার কথা।
পাইলট হতে গেলে ও কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। কিছু সঠিক দিক নির্দেশনার দরকার. আগে থেকে পাইলট হওয়ার জন্য দিক-নির্দেশনা জানা থাকলে পাইলট হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়ে যেতেও পারে।তাই আমি আজ আলোচনা করব পাইলট হওয়ার জন্য নিউ কি এবং কিভাবে পাইলট হওয়া যায় তার জন্য কি কি যোগ্যতা দরকার হয়।
বাংলাদেশ বিমান সহ যেকোনো বিমানের পাইলট হতে গেলে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং এইচএসসি বিভাগ থেকে নূন্যতম জিপিএ 2.50 পেতে হবে।
এছাড়া শারীরিকভাবে ফিট থাকতে হবে এবং ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। স্নাতক পাস করে বা স্নাতক বিভাগে পড়াশোনা থাকা অবস্থায়ও পাইলসের জন্য আবেদন করা যায়।
এইচএসসির পর আবেদন করতে হবে যেকোনো ফ্লায়িং ট্রেনিং একাডেমিতে।
প্রথমত গ্রাউন্ড এবং ফ্লাইং প্রশিক্ষণ শেষে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্সের আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুসারে লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে 40 ঘণ্টা ফ্লায়িং করতে হয়। পিপিএল পাওয়ার পর আবেদন করতে হয় কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্সের জন্য।
এর জন্য ফ্লাইং করতে হয় দেড়শ ঘন্টা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দেশ-বিদেশের এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট অফিসার বা কো পাইলট হিসেবে আবেদন করা যায়।
পাইলট কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য আগে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। দুটি ধাপে এই পরীক্ষা সম্পন্ন হয় মৌখিক এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণত বিজ্ঞান এবং সাধারন জ্ঞানের উপর প্রশ্ন করা হয়। সেই পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট একাডেমিতে হয় এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা সিভিল এভিয়েশন অনুমোদিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে হয়।
ভর্তি কোর্স থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা পাইলট কোর্স করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এরপর তাদের আরো তিনটি ধাপ পেরোতে হবে। গ্রাউন্ড কোর্সের পরে পেতে হয় এসপি বা স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্স।
এরপর পেতে হয় পিপিএল বা পাইলট প্রাইভেট লাইসেন্স। সবশেষে পেতে হয় সিপিএল বা কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স।তিন মাসের থিউরি কোর্সএ বিমান কারিগরি এবং এয়ার ল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া পাইলটের আরও অনেক বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়।
গ্রাউন্ড কোর্সের পর সংশ্লিষ্ট একাডেমি লিখিত পরীক্ষা নেয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সরাসরি বিমান চালানোর জন্য সিভিল এভিয়েশনে এসপিএল বা স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্সের আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর সিভিল এভিয়েশন অথরিটি পরীক্ষা নেয়।
সিএএবির পরীক্ষা এবং সিএএবির স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে এসপিএল দেওয়া হয়।লাইসেন্স দিয়ে 40 থেকে 50 ঘণ্টা বিমান চালানোর আজকের সার্টিফিকেট অর্জন করে বিপিএল বা প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স এর আবেদন করতে হয়। এ সময় তিন মাসের থিওরি ক্লাস এর সাথে একটি cross-country ফ্লাইট চালানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।
অতপর আবারও লিখিত ও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই মিলবে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স।
এ লাইসেন্স দিয়ে কোন বাণিজ্যিক বিমান চালনা করা যায়না। তাই পাইলট হিসেবে চাকরির জন্য প্রয়োজন সিপিএল বা কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স। এ লাইসেন্স পেতে হলে দেড়শ থেকে দুইশ ঘন্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। সিপিএল পাওয়া মানেই নিশ্চিত চাকরি। সম্পূর্ণ কোর্স করতে প্রায় দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে।
সুতরাং আমি বুঝতে পেরেছি যে পাইলট হওয়ার জন্য আমাদের কি কি ধাপ অতিক্রম করতে হবে এবং এর জন্য কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন হবে। সুতরাং আমরা যারা ছোট বেলা থেকে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখে আসছি তাদের এই দিক নির্দেশনা গুলো জানা খুব প্রয়োজন। এতে করে তারা পাইলট হওয়ার জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে পারবে।