আমরা যারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ইউজার আছি, তারা চাইলেই যেকোনো অ্যাপ ব্যবহার করতে পারি। ঠিক তেমনি অডিও ও ভিডিও এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু অ্যাপস জরুরি। বেসিকালি আমরা যে অডিও ব্যবহার করি, তা ম্যানুয়াল বা এডিটিং ফ্রি বলে তাতে অনেক নয়েজ থেকে যায়। এবং সেইসাথে সাউন্ডও ওঠানামা করতে থাকে। এই সমস্যার কারণে শ্রোতারা বিরক্ত হয় এবং তাদের মনোযোগ থাকে না।
অপরদিকে একই ক্যাটাগরির কিছু ভিডিও একসাথে পর্যায়ক্রমে জুড়ে দিয়ে ভিডিওর প্রকাশভঙ্গি সুন্দর ও সাবলীল করা সম্ভব। যাতে করে সবাই ভিডিওর টপিকটা অ্যানালাইসিস করতে পারে। আর এরজন্য প্রয়োজন ভিডিও এডিটিং অ্যাপ, যা সহজে প্রফেশনাল একটা থিম করে দিতে পারে।
- অ্যান্ড্রয়েড ফোনে অডিও ও ভিডিও এডিটিং
এবার আসা যাক মূল বিষয়ে৷ যেহেতু আমরা প্রফেশনালি অডিও ও ভিডিও এডিটিং করব তাই আমাদের অ্যাপগুলোও সেরকম হতে হবে। আর অডিও রেকর্ডের ক্ষেত্রে শুধু যে অ্যাপই মূল ভূমিকা রাখে তা নয়। বরং মাইক্রোফোনও জরুরি। কিন্তু আমি আপনাদের আজকের লেখায় দেখাব কী করে আপনি মাইক্রোফোন ছাড়াও প্রফেশনালি অডিও রেকর্ড করতে পারেন। তবে শুরুতে এর জন্য আমাদেরকে একটি থার্ড পার্টি অ্যাপ নামাতে হবে, যাতে করে আমরা ফ্রিতেই প্রো লেভেলের কিছু অ্যাপ প্রফেশনালি ব্যবহার করতে পারি। তো চলুন, দেখে নেয়া যাক কী সেই অ্যাপ এবং কোথায় পাওয়া যাবে।
এরকম অনেক থার্ড পার্টি অ্যাপই আপনি গুগলে সার্চ করলেই পাবেন। এই অ্যাপটির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। অ্যাপটির নাম লিখে সার্চ দিলে কিংবা সরাসরি অ্যাপের ওয়েবসাইটে গিয়েও আপনারা এটা নামাতে পারেন। অ্যাপটির নাম হচ্ছে হ্যাপিমোড, যা হ্যাপিমোডের ডটকম এক্সটেনশন দ্বারা একটি ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। অ্যাপটি নামিয়ে ফোনে ইনস্টল করুন। এখন দেখা যাক অডিও রেকর্ডের জন্য এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।
অডিও রেকর্ডঃ
এরপর অডিও রেকর্ডের জন্য মাইক্রোফোনের সাহায্য ব্যতীত দুটি অ্যাপ আমরা ব্যবহার করব, যা হ্যাপিমোডে পাওয়া যাবে। অ্যাপ দুটি হচ্ছে
RecForge II pro
Noise Reducer
RecForge II pro : এটি এমন একটি অ্যাপ যেখানে ম্যানুয়ালি টিউন করে নয়েজ কমিয়ে অডিও রেকর্ড সম্ভব। এবং এটা আপনার ভয়েসকে ভালো মত ফোকাসও করে।
Noise Reducer : হ্যাপিমোডের এই অ্যাপটি আমার কাছে দুর্দান্ত মনে হয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণভাবেই শুধু নিজের ভয়েস নয়েজ ফ্রী করে শোনার আশায় থাকেন তবে এই অ্যাপ তার সুযোগ করে দিবে৷ কারণ অ্যাপটির রিডিউসিং ক্ষমতা এতই বেশি যে আশেপাশের নয়েজ সেটা নব্বই শতাংশই রিকভার করে ফেলে।
এবারে ভিডিও এডিটিং নিয়ে কথা বলব। আমরা সবাই জানি ভিডিও এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে বেশি সুবিধা করে কাইনমাস্টার। তো চলুন কাইনমাস্টার নিয়ে শুরু করা যাক কিছু কথা। তবে কারও কারও জন্য শেষের দিকে কাইনমাস্টার নিয়ে একটি চমক থাকছে। তাই শেষপর্যন্ত সাথেই থাকুন।
Kinemaster : এটি এমন একটি অ্যাপ যার মধ্যে শক্তিশালী কিছু কার্যক্রম রয়েছে। যেমন ধরুন ক্রোমা কী’র কথা। সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ড সরিয়ে এই ক্রোমা কী আপনাকে নতুন একটা ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর সাবজেক্ট দাঁড় করিয়ে অপূর্ব ভিডিও এডিটিং করতে সক্ষম। আবার এটি একসাথে মাল্টি ভিডিও সমান্তরালে নিতে পারে বিধায় এডিটিং করা অন্যসব অ্যাপের থেকে সহজ। যারা ফেইস হাইড করে ভিডিও এডিটিং করতে চায় তাদের জন্য কাইনমাস্টার অন্যতম একটি অ্যাপ। কারণ এটি ভিডিওস্ক্রাইবের মত কম্পিউটার সফটওয়্যারের হোয়াইটবোর্ড অ্যানিমেশনকেও প্রায় ধরাশায়ী করে ফেলেছে। গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশন ও লেখালেখির দ্বারা এটি হোয়াইটবোর্ড অ্যানিমেশনের একটি দারুণ বিকল্প। তবে অনেকের আক্ষেপ এই যে, এত সুন্দর একটি অ্যাপ প্লেস্টোর থেকে ডাউনলোড দিয়ে ওয়াটারমার্ক যন্ত্রণা করে। আবার ওয়াটারমার্ক ফ্রি কাইনমাস্টার পেতে হলে প্রো ভার্সন ইনস্টল করতে হবে, যেটা পেইড। জানলে খুশি হবেন হ্যাপিমোডে এই অ্যাপটির প্রো ভার্সন ফ্রিতেই পাওয়া সম্ভব। যেখানে কোনোই ওয়াটারমার্ক নেই।
কাইনমাস্টার ছাড়াও আরও একটি অ্যাপ ব্যক্তিগতভাবে আমি রিকমেন্ড করতে পারি, সেটা হচ্ছে Youcut – video editor.
Youcut – video editor : এই অ্যাপটির মাঝে আপনি
সাবলীল ভাবে যেকোনো রকমের এফেক্ট দিতে পারবেন। ভিডিওর অপ্রয়োজনীয় অংশ ট্রিম করে বাদ দিতে পারবেন। এছাড়াও ব্যাকগ্রাউন্ড, স্টিকার ও অডিও অ্যাড করে ভিডিওকে আরও চমৎকার করা সম্ভব খুব সহজেই। আর এই অ্যাপটিও কোনোরকম পেইড কস্ট ছাড়া পেতে হ্যাপিমোড থেকে ডাউনলোড দিতে পারেন।
সর্বশেষ এ কথা অনস্বীকার্য যে, প্রফেশনালি অডিও ও ভিডিও এডিটিং করতে থার্ড পার্টি অ্যাপ হ্যাপিমোড অনেক গুরুত্ব বহন করে। আর তাই অ্যাপগুলোর মোড ভার্সন ব্যবহার করুন এবং নিজেই পার্থক্যটা বুঝে নিন।