দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র : আইনের চোখে বিভিন্ন চুক্তিপত্র গুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে ভূমিকা রাখে। একটি চুক্তিপত্র তে লেখা থাকে, চুক্তির বিষয়বস্তু কি হবে, চুক্তিপত্রে কি কি শর্ত থাকবে ইত্যাদি সম্পর্কে।
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, চুক্তিপত্র করার প্রয়োজন হয়। সেটি হতে পারে ব্যক্তিগতভাবে আবার ব্যবসায়িক ভাবে।

ব্যবসায়িক ভাবে আমাদের কোন ব্যবসা শুরু করতে, বিভিন্ন ধরনের চুক্তি করার দরকার হয় তার মধ্যে প্রথমেই চলে আসে, দোকান ভাড়া বাণিজ্যিক স্থান ভাড়ার চুক্তিপত্র বিষয়টি।
কারণ এ যুক্তিপত্র না থাকলে, আপনারা ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন না। এছাড়া বৈধভাবে ব্যবসা শুরু করার সুযোগ পাবেন না।
তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র কিভাবে সম্পাদন করতে হয়, সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
আমি আশা করব, আপনারা আমাদের লেখা টিক্যালটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
আমরা এখানে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র তৈরি করার যে, নমুনা উপস্থাপন করব যা অনুসরণ করে, আপনারা খুব সহজেই ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দিতে পারবেন।
তো চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা নেয়া যাক।
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র
চুক্তিপত্র শুরু করার আগে আপনাদের অবশ্যই চুক্তিপত্রের উল্লেখ করতে হবে। যেমন- দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র নিম্ন পক্ষদ্বয় এর মধ্যে অদ্য ২৬/০৬/২০২৩ ইং তারিখে সম্পাদিত করা হইল।
প্রথম পক্ষ, মালিক
জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন, পিতা-মৃত- আহমদ আলী, মাতাঃ মোসাম্মৎ সুলতানা খানম, সাংঃ ফ্ল্যাট ১৩ বি, তৃতীয় তলা, বাসা নং- ২২২/১, রোড নং- ১১, ঢাকা- ১২০০। জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর- ১২৩৪৫৬৭৮৯০, ধর্ম- ইসলাম, জাতীয়তা, বাংলাদেশী।
দ্বিতীয় পক্ষ, ভাড়াটিয়া
জনাব মোঃ আলাল উদ্দিন, পিতা- মোঃ আজগর আলী, মাতাঃ সালমা খাতুন, সাংঃ ভালুকা, বাসা নং- ১২/৪, রোড নং- ২৩, ময়মনসিংহ। জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর- ১৯৮৭৬৫৪৩২১, ধর্ম- ইসলাম, জাতীয়তা, বাংলাদেশী।
এরকমভাবে, প্রথম পক্ষ মালিক দ্বিতীয় প্রকার ভাড়াটিয়ার নাম ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। তারপর বিস্তারিত বর্ণনা শুরু করতে হবে।
সিকিউরিটি জামানত পদ্ধতিতে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র কার্যার্থে মালিক প্রথম পক্ষ তফসিলে বর্ণিত মত্তির মালিক এবং দখলদার বিদ্যমান থেকে।
মালিক ১ম পক্ষ নিম্ন বর্ণিত সম্পত্তি তে দোকান ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব করিলে, ধারাদিয়া দ্বিতীয় পক্ষ নিম্ন লিখিত শর্তাবলী মোকাবেলায় নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করেন।
যেহেতু প্রথম প্রথম মালিক নিম্নে বর্ণিত সম্পতি এবং উহার নির্মিত ভবন বাড়ি’র দখলকার এবং স্বত্ত্বাধিকারী। যেহেতু নিম্নে তফসিল বর্ণিত জায়গার মাসিক ভাড়া ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা। বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল এবং সার্ভিস চার্জ সহ আনুসাঙ্গিক খরচ দ্বিতীয় পক্ষ গ্রহণ করিবেন।
প্রথম প্রথম মালিক ভাড়াটিয়া দ্বিতীয়পক্ষকে ধারা দিতে সম্মত আছেন। যেহেতু পক্ষগণের পারস্পার একটি সমঝোতার ভিত্তিতে নিম্নলিখিত শর্ত অনুযায়ী দোকান ভাড়া সম্মত আছেন সেহেতু অত্র চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হলো।
উপরোক্ত তথ্যমত আপনারা বিবরণ সম্পন্ন করবেন। তারপর দোকান ঘর ভাড়ার যে শর্ত গুলো প্রযোজ্য। সেগুলো নিম্নে সম্পন্ন করবেন। যেমন-
দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র’র শর্তাবলী
০১. যেহেতু অত্র টিচার আর চুক্তিপত্রের মেয়াদ প্রাথমিকভাবে তিন বছর জন্য প্রযোজ্য করা হবে যা ২৬/০৬/২০২৩ ইং হইতে ২৬/০৬/২০২৬ ইং পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এক্ষেত্রে প্রথম প্রথম মালিক ইচ্ছা অনুযায়ী পারস্পারিক সমাজতার মাধ্যমে সময়ের পরিবর্তন করতে পারবে এবং সে ক্ষেত্রে নতুন চুক্তিপত্র করিতে হয় দিন।
নতুন চুক্তিপত্র বর্তমান চুক্তিপত্র নামায় যে সকল শর্ত রয়েছে। সেগুলো বহাল থাকবে এবং মালিক প্রথম পক্ষ ইচ্ছা করলে তার স্বার্থে এই চুক্তিপত্র নতুন শর্ত গ্রহণ করিতে পারবেন।
সবার আগে দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া দোকান ঘর ছেড়ে দিলে, জামানতের সকল টাকা অফারতযোগ্য হয়ে যাবে।
০২. দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া, প্রথম পক্ষ মালিক কে, দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্যভ জামানত হিসেবে = ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা নগদ প্রথম পক্ষ বুঝিয়া পাইয়া দোকান ঘর বুঝাইয়া দেন।
০৩. দোকান ঘর ভাড়াটিয়া দ্বিতীয় পক্ষ অন্য কারো নিকট এ দোকান ভাড়া বা চুক্তি করিতে পারবেনা। যদি কোন কারণে অবৈধভাবে কারণেকট সে দোকান ভাড়ার চুক্তি সম্পন্ন করে সে চুক্তিপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
উক্ত চুক্তিপত্র জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবেন, দোকান থেকে উচ্ছেদ করে দেয়া হবে।
০৪. প্রথম প্রথম মালিক কোন কারণে এই দোকান প্রয়োজন মনে করলে দ্বিতীয়পক্ষকে দুই মাস আগে লিখিতভাবে নোটিশ দিবেন সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পক্ষ, প্রথম পক্ষ কে নোটিশের দুই মাস পর সকল হিসেব বুঝিয়া দিয়ে, প্রথম পক্ষ কে স্মরণ বুঝিয়ে দিবেন।
প্রতিমাসে ভাড়া চলতেই ইংরেজি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে দ্বিতীয় পক্ষ ভারতীয় প্রথম পক্ষ মালিক কে পরিশোধ করবেন। এবং কোন কারনে ৭ তারিখের মধ্যে ভাড়াটিয়া দ্বিতীয় পক্ষ যদি চলতি মাসের ভাড়া পরিশোধ না করতে পারে। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পক্ষ ডিফল্টার হিসেবে গণ্য হবে।
সে অনুযায়ী ভাড়াটিয়া একাধারে দুই মাসের ভাড়া পরিষদ না করতে পারলে তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত এবং উৎসব গণ্য হয়ে যায়।
উপরোক্ত আলোচনায় যে শর্তগুলো সম্পর্কে জানতে পারলেন, এরকম ধরনের আরো শর্ত আপনারা সংযোজন করতে পারবেন। আমরা শুধুমাত্র আপনাকে নমুনা জানিয়ে দিলাম
ইতি,
তারিখঃ ২৬/০৬/২০২৩ ইং
১ম পক্ষের স্বাক্ষরঃ ………….।
২য় পক্ষের স্বাক্ষরঃ ………….।
স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষরঃ
১। নাম :
ঠিকানা :
মোবাইল :
২। নাম :
ঠিকানা :
মোবাইল :
৩। নাম :
ঠিকানা :
মোবাইল :
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আপনারা যারা দোকান ভাড়া চুক্তিপত্র সম্পাদন করতে চান? তারা উপরোক্ত নমুনা অনুযায়ী খুব সহজেই প্রথম পক্ষ এবং দ্বিতীয় পক্ষ মিলে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র সম্পাদন করতে পারেন।
আর এই চুক্তিপত্র সম্পর্কে আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে, তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।