অনলাইনে আয়ঃ সতর্কতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়া।

তীব্র প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে অনলাইনে আয় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হতে পারে আপনার একটি সুন্দর ক্যারিয়ারের উপায়ন্তর। অন্যদিকে এটাই হতে পারে আপনার অর্থ, সময় এবং শ্রম অপাত্রে বিনিয়োগের কারণ। বাংলাদেশের তরুণরা ফ্রিল্যান্সিংয়ে যেমন ভাল করছে তেমনি অসংখ্য তরুণ ফ্রিল্যান্সিং এর পিছনে অর্থ, সময় এবং শ্রম ব্যয় করে অর্জনের খাতা শুন্যই পড়ে রয়েছে। উল্টো জীবনকে করেছেন ছন্দ ছাড়া এবং গতিহীন। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় অর্জন করতে পারে না যোগ্যতা ও দক্ষতা। যার ফলে মার্কেটপ্লেসগুলোতে সময় ব্যয় করে, অযাচিত ট্রেনিং করে হাজার হাজার তরুন তরুনীর অর্জনের খাতায় যোগ হয়নি কোন সাফল্য। বেড়ে যায় হতাশার গ্লানি। অন্যদিকে বাংলাদেশে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ট্রেনিং সেন্টার যাদের নিজেদের কোনো অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নেই অনলাইনে তারাই খুলে বসেছেন ট্রেনিং সেন্টার।

অনলাইনে আয়ের বিষয়ে আপনি যদি সত্যিই আগ্রহী হোন প্রথমে চিন্তা করুন আপনার কোন বিষয়ে আগ্রহ এবং দক্ষতা রয়েছে। অনলাইনে আয় কথাটা শুনতে যত সহজ বাস্তবিক পক্ষে আয় করাটা কিন্তু ততটা সহজ নয়। অনলাইন থেকে আয় তারাই করতে পারেন যারা তাদের কাজ সর্বদা গুরত্বের সাথে নিয়ে থাকেন।
আপনাকে অনলাইনে ইনকাম করতে হলে আপনাকে কিন্তু সিরিয়াস হতে হবে এবং আপনার কাজ নিয়ে আপনাকে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা প্রতিদিন করতে হবে। নতুন নতুন চিন্তাভাবনা আপনাকে অনেক নতুন দ্বার খুলে দেবে ইনকাম করার ক্ষেত্রে।
সেটা হতে পারে প্রোগ্রামিং অথবা হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন এমন কি হতে পারে একাউন্টিং রিলেটেড কোন কাজ। অনলাইনে বিক্রয়, অন্যদেরকে আপনার জানা বিষয় পড়ানো বা ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হয়ে কাজ করাও আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সাথে জড়িত। যদি আপনার এই ধরনের কোন দক্ষতা না থেকে থাকে তাহলে আপনার উচিত হবে দক্ষতা অর্জনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো। আপনি ভালোমানের ট্রেনিং সেন্টার থেকে নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন অথবা ইউটিউব কিংবা অন্যান্য লার্নিং সাইট থেকে টিউটোরিয়াল দেখেও দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। এজন্য লাগবে আপনার ঐকান্তিক ইচ্ছে শক্তি এবং অর্জন না করা পর্যন্ত লেগে থাকার দৃড় মানসিকতা। সুনির্দিষ্ট কাজের দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি আপনার আরো যে বিষয়টি গুরুত্বের সহিত শিখতে হবে সেটা হবে ইংরেজিতে যোগাযোগের দক্ষতা। যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক কাজগুলো অন্যদেশের হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে যোগাযোগ মূলত ইংরেজিতে হয়ে থাকে। সেজন্যই ইংরেজি দক্ষতা আপনাকে অনেক দূর এগিয়ে রাখবে। ইংরেজি যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন আপনার ক্যারিয়ারে সুবাতাস বয়ে আনবে। ইংরেজি লিখা এবং বলা শিখার জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন ইউটিউব যেখানে রয়েছে শত শত টিউটরিয়াল। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে ইংরেজি শেখানোর সেগুলোতে রেজিস্টার হয়েও নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে আপনি ইংরেজিতে তুখোড় হয়ে উঠতে পারেন। সুনির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন এবং ইংরেজীতে পারদর্শী হয়ে আপনি পুরোদমে প্রাণশক্তি নিয়ে নেমে পড়বেন মার্কেটপ্লেসগুলোতে। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস upwork.com এবং freelancer.com। এছাড়াও আরও অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত আসছে। সেগুলোতে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে হিসাব খুলবেন এবং আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতা অনুযায়ী ক্লায়েন্টের পোস্ট করা জবগুলোতে বিড করবেন। কাজের শর্ত অনুযায়ী নিজেকে প্রেজেন্ট করলে আপনি সফল হবেনই।

যথাযথ দক্ষতা অর্জন ব্যতীত আপনি কখনোই সাফল্য অর্জন করতে পারবেন না ব্যর্থতার বৃত্তেই পড়ে থাকবেন। আপনি যেটা ভালো পারেন আপনি আপনার সেই কাজটা দিয়েই অনলাইনে রোজগার করতে পারবেন। যদি সেটা সঠিক পন্থায় ক্লায়েন্টের নিকট তুলে ধরতে পারেন। অমুক বাবু বললেন আপনি তমুক কাজ করলে ভালো ইনকাম করবেন, আবার তমুক বাবু বললেন আপনি অমুক কাজ দিয়ে ভালো ইনকাম করতে পারবেন! আপনি দুজনের কথাই শুনলেন এবং দুটোই চেষ্টা করলেন, কিন্তু এই দুই কাজের কোনটাই আপনার পছন্দের ছিল না বলে আপনি কোনটাই বেশিদিন করতে পারবেন না। লাভের লাভ আপনার কয়েকটা দিন নষ্ট হল। এক সময় বিরক্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিবেন এতে আপনার সময় এবং শ্রম দুটোই বিফলে যাবে। তাই যথাযথ দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে একজন গর্বিত ফিল্যান্সার হিসেবে গড়ে উঠুন। কাজ শেখা এবং যোগাযোগ দক্ষতা অর্জনে অধিকতর মনোযোগী হোন। বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top